২০২২ বিটিআরসি নিয়ম অনুযায়ী সিম কতদিন বন্ধ থাকলে মালিকানা চলে যায় জানুন
হায় বন্ধুরা কেমন আছেন নিশ্চয়ই ভালো আছেন? Probd420 ব্লগ ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই স্বাগতম। এই আর্টিকেলে আমি আলোচনা করবো কতদিন সিম বন্ধ রাখলে সিমের মালিকানা নষ্ট হয়ে যায়।
আমাদের দেশের সিমের নম্বর শুরু হয় 01 দিয়ে। এই 01 নম্বর এর সঙ্গে আরও 9 টি সংখ্যা যুক্ত করে মোট 11 সংখ্যার হয় একটি পূর্ণ মোবাইল নম্বর। কিন্তু প্রতি অপারেটরের ক্ষেত্রে 01 এর পর আলাদা আলাদা কোড বরাদ্দ থাকে। যেমন বাংলালিংক এর ক্ষেত্রে 01 এর পর 9 হয়ে থাকে এবং বর্তমানে আরও একটি সংখ্যা 9 এর জায়গায় যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ বাংলালিংক সিমের কোড হলো 019 এবং 014, গ্রামীন সিমের কোড হলো 017 এবং 013, এয়ারটেল এর কোড হলো 016, রবি সিম কোড হলো 018 এবং টেলিটক সিমের কোড হলো 015 দিয়ে শুরু হয়ে থাকে।
এখন প্রশ্ন হলো বাংলালিংক এবং গ্রামীনফোনের এক্সট্রা কোড যুক্ত হয়েছে কেনো? কারন একটা অপারেটরের প্রথম দফায় ১০ লক্ষ নম্বর শেষ হয়ে গেলে। একই কোডে নম্বর তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই তারা এক্সট্রা কোড যুক্ত করেছে। অর্থাৎ বাংলালিংক সিমের নতুন কোড 014 এবং গ্রামীনফোন এর নতুন কোড 013।
সিম অপারেটর থেকে যখনই কোন গ্রাহক সিম ক্রয় করে তখন থেকেই সেই সিমটা এক্টিভ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু সিম কেনার পর যদি ব্যবহার করা না হয় বা ফেলে রাখা হয় তবে সেই সিম বন্ধ হিসেবে ধরা হয়।
আর সেই সিম যদি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে রাখা হয় তবে সেই সিম পরিত্যক্ত হিসেবে গন্য করা হয়। সিম পরিত্যক্ত হিসেবে ধরার কিছু দিনের মধ্যে সেই সিমের মালিকানা বাতিল হয়ে যায়। অর্থাৎ সিম ব্যবহার না করে শুধু শুধু ফেলে রাখলে একটা সময়ের পর সে সিম একদমই ডেড হয়ে যায়।
তো এবার জেনে নেওয়া যাক অপারেটর গুলো অর্থাৎ রবি, গ্রামীন, বাংলালিংক, এয়ারটেল, টেলিটক কোন অপারেটর কতো দিন বন্ধ থাকলে তার মালিকানা নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ কত দিন সিম বন্ধ থাকলে মালিকানা বাতিল হয়ে যায়।
গ্রামীন সিম কতো দিন বন্ধ থাকলে মালিকানা বাতিল হয়ে যায়?
সিম বন্ধ ধরা হয় মিনিমাম ৪৫০ দিন বন্ধ থাকলে৷ যদি আপনার কেন সিম ৪৫০ দিন একটানা বন্ধ হয়ে থাকে তবে ঐ সিম বন্ধ হিসেবে গন্য করা হয় এমনকি মালিকানা শেষ হয়ে যায়। তখন চাইলেই সিম অপারেটর কোম্পানি অন্য কোন গ্রাহকের কাছে সে সিম বিক্রি করে দেওয়ার অধিকার রাখে। যদি সিম এক্টিভ রাখতে হয় তবে এই সময়ের মধ্যে সিম ফোনে ভরে কিছু টাকা রিচার্জ করুন। কারন একটা সময় পরে সিম অন করলেও টাকা রিচার্জ না করলে সিম অন হিসাবে ধরা হয় না। বিটিআরসির নিয়ম অনুসারে সিম মালিকানা ঠিক রাখতে হলে সিম অন করুন এবং নুন্যতম কিছু টাকা রিচার্জ করুন।
বাংলালিংক সিম কতো দিন বন্ধ থাকলে মালিকানা বাতিল বলে ধরা হয়?
বিটিআরসির নিয়ম অনুসারে বাংলালিংক সিম এর একই নিয়ম রয়েছে। ৪৫০ দিন পর্যন্ত আপনার সিম বন্ধ থাকলে আপনি সিমের মালিক থাকবেন কিন্তু ৪৫০ দিন অভার হয়ে গেলে সিম অপারেটর কোম্পানি ঐ সিম অন্য কারও কাছে বিক্রি করে দিতে পারে। তখন আপনি চাইলেও ঐ সিম ব্যবহার করতে বা সিম নতুন করে তুলতে পারবেন না। যদি দেখেন ৪৫০ দিন পরে আপনার সিম অন রয়েছে তবে বুঝতে হবে সিম অন্য কেউ ব্যবহার করছে। অর্থাৎ মালিকানা পরিবর্তন হয়ে গেছে।
রবি বা এয়ার্টেল সিম মালিকানা হারানোর নির্দিষ্ট সময় কতো?
রবি এবং এয়ার্টেল বর্তমানে একই কোম্পানির আওতাভুক্ত। এক সময় এই সিম অপারেটর দুটির আলাদা আলাদা কোম্পানি ছিলো কিন্তু বর্তমানে এই দুটি কোম্পানি এক অপারেটর হয়ে গেছে। তাই এই অপারেটর দুটির অব্যবহৃত সিমের মালিকানা হারানোর মেয়াদ একই। বিটিআরসির মতে ৪৫০ দিন একটানা বন্ধ থাকলে এই সিম দুটিও মালিকানা হারাবে৷ যদিও এই অপারেটর দুটির গ্রাহক খুব একটা বেশি নয় তাই মালিকানা নষ্ট হয়ে গেলেও কাস্টোমার কেয়ারে সিম কেনার সময় যে কাগজপত্র দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেছিলেন সে গুলো নিয়ে গিয়ে সিম তুলার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
অব্যবহৃত টেলিটক সিম কত দিন পর বন্ধ হয়ে যায়?
আপনি হয়তো অবশ্যই জানেন টেলিটক অপারেটর টি সরকারি। তো যেহেতু টেলিটক সিম সরকারি সেহেতু এটি ১০০% বিটিআরসির নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ টেলিটকের কোন সিম যদি ৪৫০ দিন অর্থৎ ১৫ মাস এক নাগাড়ে বন্ধ থাকে তবে এ সিম অবশ্যই বাতিল বলে গন্য হবে এর কোন ভুল নেই। এর সাথে হয়তো আরও ৩০ দিনের একটা সুযোগ দিতে পারে কিন্তু তার পর এই সিম কোম্পানি অন্য কোন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেওয়ার অধিকার রাখে।
তাই যদি কোন সিম সঠিক ভাবে সক্রিয় রাখতে চান তবে অবশ্য বিটিআরসির নিয়ম অনুসারে ৪৫০ দিন অর্থাৎ ১৫ মাসের মধ্যে সিম অন করতে হবে এবং সামান্য কিছু টাকা রিচার্জ করতে হবে। আমি আগেই বলেছি ১২/১৩ মাস ধরে যদি বন্ধ থাকে তবে সিন একটিভ করার পরও একটিভ হিসাবে গন্য করে না যতক্ষণ সামান্য কিছু টাকা রিচার্জ না করেন।
তাই আমার সাজেশন থাকবে যদি এমন কোন সিম আপনার থেকে থাকে যে বহুদিন বন্ধ রয়েছে তবে সে সিম অবশ্যই চেক করুন ঠিক আছে কি না। আর যদি ঠিক থাকে তবে সর্বনিম্ন ১০ টাকা রিচার্জ করে আবার বন্ধ করে রাখুন তবে আরও ১৫ মাস নো টেনশনে থাকবেন।
আর যদি দেখেন সিম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে তবে ঐ সিম যে NID কার্ড দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা ছিলো সে কার্ড বা, কার্ডের ফটোকপি নিয়ে সিম কাস্টোমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন। আর জানুন যে সে সিম মালিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে কি না। যদি না হয় তবে ঐ সিম টি তুলে দেওয়ার অনুরোধ করুন তবে কাগজ পত্র ঠিক থাকলে তারা অবশ্যই তুলে দিবে।
আশাকরি আমার এই লেখাটির মাধ্যমে আপনার উপকার হয়েছে। যদি উপকার হয়ে থাকে তবে অবশ্যই এই আর্টিকেল টি শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের কাছে।
ধন্যবাদ সম্পুর্ন লেখাটি পড়ার জন্য।
Post a Comment