ভেজা চুলের যত্ন নিতে যে ভুল গুলো কখনও করবেন না!

গোসল বা, স্নান মানব জাতির নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। সকালে ঘুম থেকে উঠে বা, বাইরে থেকে এসে গোসল করা আমাদের অভ্যাসএ পরিনত হয়েছে। অর্থাৎ ফ্রেশ হওয়ার জন্য আমরা নিয়ম ঠিক পালন করি কিন্তু স্নান শেষে কিছু ভুল অভ্যাস আমাদের চুলের অনেক বড় ক্ষতি করে। ভুল গুলো যেমন গোসল শেষে কেউ কেউ চুল আঁচড়ে ছাড়িয়ে নিতে বা কেউ কেউ তাড়াতাড়ি চুল শুখাতে হিট দেয়। কিন্তু বয়স বা শ্রেনী ভেদে প্রতি প্রত্যেকে তার চুলের যত্ন নিতে পছন্দ করেন। তো সর্বোপরি চুল ঠিক রাখতে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা প্রয়োজন। তাই সর্বপ্রথম গোসল শেষে ভেজা চুলের যত্ন নেওয়া জরুরি। এ জন্য জেনে নেওয়া যাক ভেজা চুলের যত্ন নিতে যে ভুল গুলো কখনও করা উচিটার নয়।

ভেজা চুলের যত্ন নিতে যে ভুলগুলো কখনো করবেন না-

ভেজা চুল আঁচড়ানো

গোসল শেষে চুল শুখানো পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা খুব কম লোকই রয়েছে। তাই ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ে ফেলার অভ্যাস ছোট বেলা থেকে সেট হয়ে যায়। যদিও এ অভ্যাস টা পুরুষ দের ক্ষেত্রে অনেক বেশি। কিন্তু একটু লক্ষ করলেই বুঝতে পারবেন ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ালে চুল পড়ার চান্স অনেক বেশি থাকে। এর একমাত্র কারন ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া অনেক নরম থাকে আর নরম অবস্থায় চুল টান লাগলে গোড়া থেকে উঠে আসাটা স্বাভাবিক। মেইনলি ভেজা অবস্থায় চুল বেশি নাড়া পড়লে চুলের গ্রন্থি গুলো ভিষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই চুল পড়ার হার অনেক বেশি হয়। সাথে চুলের আগা ফাটা, চুল ফ্রিজি হয়ে যায় এমনকি দির্ঘ মেয়াদি এই সমস্যা চলতে থাকে। তাই এই সমস্যা থেকে বাচতে হলে ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। চুল চোড়ার জন্য সবসময় চুল শুখানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। 


ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানো

চুল না শুখিয়ে ঘুমিয়ে পড়া-

বাইরে থেকে এসে গোছল শেষ করে ক্লান্তি দুর করার জন্য শুয়ে পড়লেন। শুতে শুতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লেন তা কিন্তু টেরই পেলেন না। এটাই হচ্ছে চুলের জন্য সবচেয়ে বড় ভুল। মনে রাখা উচিৎ ভেজা চুল নিয়ে কখনও ঘুম পড়া ঠিক না। কারন এতে চুলের বারোটা বেজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি ভুল করেও ঘুমানোর আগে চুল ভিজিয়ে থাকেন তবে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুখিয়ে নেওয়া উচিৎ। হেয়ার ড্রায়ার এর থেকে সুধু বাতাসে চুল শুখানো উত্তম।

ভেজা অবস্থায় চুল বেঁধে রাখা-

ভেজা চুল বেঁধে ফেলার প্রবনতা অনেক নারীর মধ্যে রয়েছে। কারন অনেক সময় তাড়া হুড়া করে অফিস বা কোন অনুষ্ঠানে যেতে হতে পারে বা কোন ইমার্জেন্সি কাজ করতে হতে পারে এমন সময় নারীরা চুল বেধে ফেলে। এর ফলে চুলের স্বাস্থ্যের তো ক্ষতি হয় সাথে চুলে প্রচন্ড দুর্গন্ধ হতে পারে। ভেজা চুল বাধলে চুল শুখাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে তাই চুলের গোড়ার গ্রন্থি গুলো অনেকটা অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এতে চুল পড়া শুরু হতে পারে৷ আর ভেজা চুল কখনও বেনি বা ঝুটি বাধা উচিৎ নয় এতে চুল বেশি জড়িয়ে যেতে পারে তাই শুখিয়ে যাওয়ার পরে চুল ছাড়াতে গেলে চুল ছিড়তে শুরু করে।

তোয়ালে বা, গামছা দিয়ে চুল ঘষা-

অধিকাংশ লোকের ধারনা, ভেজা চুল যত জোর দিয়ে মুছা যাবে ততো তাড়াতাড়ি শুকাবে। ধারণাটা যদিও ঠিক কিন্তু এর ফল মোটেও ভালো না। ভেজা চুল মুছতে গিয়ে যদি জোরে জোরে ঘসা হয় তবে চুল ওঠার সম্ভাবণা রয়েছে। কারন আগেই বলেছি ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া ভিশন নরম থাকে যার ফলে গোড়ার কোষগ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই চুল মোছার জন্য যে তোয়ালেটা ব্যবহার করবেন সেটা নিয়েও ভাববেন। যদিও সব থেকে ভালো হয় মাইক্রোফাইবার তোয়ালে দিয়ে আলতো করে হাত দিয়ে চেপে চেপে চুলের এক্সট্রা জল শুখিয়ে নেওয়া তারপর বাতাসের মাধ্যমে সুন্দর করে শুখিয়ে নেওয়া।

হিট দিয়ে না শুকানো-

বর্তমান চুলের স্টাইলের জন্য হেয়ার ড্রায়ার, হেয়ার স্ট্রেইটনার ইত্যাদি মেসিং গুলোর ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সময় এবং শ্রম কমিয়ে দেওয়া এই সরঞ্জাম গুলো ব্যবহার করে স্টাইল করা খারাপ না। কিন্তু যদি সেটি চুল শুখানোর জন্যও ব্যবহার করা হয় তবে তো চুলের বারোটা বাজবে এটা নিশ্চিত থাকুন। একটু ভেবে দেখেছেন যদি শার্ট না শুখিয়ে ইস্ত্রি করা হয় তবে শার্টের কাপড় কি ভালো থাকবে। নিশ্চয়ই থাকবে না তাই শার্ট বা, কাপড় ঠিক রাখার জন্যে আগে শুখিয়ে তারপর আয়রন / ইস্ত্রি করা উচিৎ, তেমনি চুলও আগে ভালো করে ন্যাচারাল ভাবে শুখিয়ে নিয়ে তারপর ঐ সব সরঞ্জাম ব্যবহার করে স্টাইল করা উচিৎ।

তাই আমার সাজেশন হলো এই মেসিং গুলো স্টাইলের জন্য ব্যবহার করুন কিন্তু শুকানোর জন্য নয়। স্ট্রেইটনা বা, ড্রায়ার এর থেকে আসা তাপ চুলের ভিশন ক্ষতিকরে। ভেজা চুল সবসময় তাপ বেশি শোষণ করে যার ফলে চুল পুড়ে যেতে পারে। তাই চুল ভাল করে শুখিয়ে এগুলো ব্যবহার করুন।

চুলের যত্নে যা কিছুই করেন না কেনও যদি ভেজা চুলের সঠিক যত্ন না নেওয়া হয় তবে কোনভাবেই চুল সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পারেন না। তাই সর্বপ্রথম ভেজা চুলের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করুন।

আমার প্রিয় পাঠকবৃন্দ যদি লেখাটি আপনার বিন্দুমাত্র উপকার করে থাকে তবে অবশ্য কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ!!!

Post a Comment

Previous Post Next Post