বয়সের ছাপ বা বলিরেখা | ত্বকের ভাঁজ দূর করার ১১টি টিপস!
সময় সময়ের গতিতে চলতে থাকে। সময় চলে যাওয়া মানে সময়ের সাথে সাথে বয়স বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। এটা আমাদের সবার জানা যে বয়স কোনভাবেই ধরে রাখা সম্ভব নয়। তবে এটা সঠিক, বয়স বাড়ার সাথে সাথে মুখে বা শরীরে বয়সের যে ছাপ অর্থাৎ বলিরেখা তা আমরা আয়ত্তে আনতে পারবো। অর্থাৎ কিছু নিয়ম ফলো করে, অনুশীলন এর মাধ্যমে, কিছু খাদ্যাভ্যাস, কিছু সতর্কতা অবলম্বন এর মাধ্যমে বয়সের ছাপ অর্থাৎ বলিরেখা দুর করতে পারবো। নিচে আলোচিত কিছু নিয়ম প্রতিনিয়ত ফলো করে বয়সের ছাপ বা, বলিরেখা দুর করতে পারবেন আর হয়ে উঠতে পারবেন সতেজ, স্নিগ্ধ, উৎফুল্ল ও প্রাণবন্ত। তাই মনোযোগ সহকারে নিচের নিয়ম গুলো পড়ে ফেলুন।⤵️⤵️⤵️
বয়সের ছাপ বা বলিরেখা দুর করতে কি করণীয়?
বয়সের ছাপ বা, বলিরেখা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এতো দুশ্চিন্তা করেও কোন ফয়দা হচ্ছে না যে কিভাবে একটু সতেজ হতে পারবো। তবে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে বয়সের ছাপ অর্থাৎ বলিরেখা দুর করে ত্বকে আনা যাবে প্রানবন্ত ভাব-
১) Use sunscreen / সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার
সানস্ক্রিন ক্রিম কেনো ব্যবহার করবেন? এই প্রশ্নের উত্তর হলো মুখে বয়সের ছাপ বা বলিরেখার একমাত্র প্রধান কারন হলো সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনী রশ্মি। বিশেষ করে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সময় টুকু সুর্য থেকে প্রখর অতিবেগুনী রশ্মি নির্গত হয়। তাই ব্রান্ডের সানস্ক্রিন ক্রিম বা সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন যাতে সুর্যের অতি বেগুনি রশ্মি মুখে না লাগে। এটি শুধুমাত্র মুখের ছাপ বা বলিরেখা দুর করতে সাহায্য করে না বরং সাথে তকের ক্যান্সার এর হাত থেকেও বাচায়।
২) ধুমপান বর্জন করুন
ধুমপান স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। ধুমপান মৃত্যু ঘটায়। ধুমপান এর কারনে ক্যান্সার হয়। এই সব কথা নিশ্চয়ই আপনি যানেন। এছাড়াও ধুমপানের কারনে বয়সের ছাপ বা, বলিরেখা খুব তাড়াতাড়ি দেখা দেয় সেটা হয়তোবা জানতেন না। তাই আজ জেনে রাখুন ধুমপান অন্যতম একটি কারন মুখে বয়সের ছাপ ফুটে ওঠার। তাই ধুমপান বর্জন করুন। এরপর যখন সিগারেট ধরাবেন তখন একবার হলেও উপরের কথা গুলো মনে করবেন।
৩) পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
ঘুম ঠিক মতো না হলে আমাদের সারাদিন খারাপ যায়। কোনো কাজেই মন বসে না। এমন কি শরিরের মধ্যে ভিশন বিরক্ত লাগে। একজন মানুষ সুস্থ সবল থাকার জন্য ঘুম অন্যতম ভুমিকা পালন করে। তাই নিম্নে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম পড়ুন। আর মনে রাখবেন ঘুমানোর সময় সর্বদা উপরের দিকে মুক করে ঘুমান অর্থাৎ পিঠে ভর করে ঘুম পড়ুন। ভুট হয়ে অর্থাৎ পেটের উপর ভর করে ঘুম পড়বেন না। এতে শরীরের রক্তের চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে খুব অল্প বয়সে বয়সের ছাপ দেখা দেয়। তাই সঠিক নিয়মে পর্যাপ্ত ঘুম পড়ুন।
৪) মাছ এবং ওমেগা ৩ যুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
আপনি হয়তো জানতে পারেন ওমেগা ৩ যুক্ত খাবার তারুণ্য ধরে রাখতে অনেক বড় ভুমিকা পালন করে। যদি না জেনে থাকেন তবে মনে রাখবেন সামুদ্রিক মাছ এবং ওমেগা ৩ যুক্ত খাবার এবং বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি ফলমূল তারুণ্য ধরে রাখার বিশেষ ভুমিকা পালন করে। তাই সব সময় খাবারের সাথে এই সব খাবার রাখার চেষ্টা করবেন।
৫) ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনে সচেতনতা
ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন বলতে মুখের ভংগিমার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের অনেকেই দেখবেন কথা বলার সময় কপাল কুঁচকে কথা বলে। অনেক সময় কিছু দেখতে গেলেও কপাল চোখ কুচকে দেখার চেষ্টা করে। এতে মুখের চামড়ার উপর অনেক প্রভাব পড়ে। যদি চোখে সমস্যা থাকে তবে অবশ্যই চশমা ব্যবহার করুন কিন্তু চোখ কুঁচকে দেখার চেষ্টা করবেন না।
৬) ময়েশ্চারাইজার
মুখ অলওয়েজ পরিস্কার রাখার চেষ্টা করুন। কিন্তু অতিরিক্ত মুখ ধোঁয়া মোছা করবেন না এতে মুখের চামড়ার কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ধুয়ে ফেলুন আর নরম কাপড় দিয়ে মুখ মুছুন। মুখ মুছতে টিস্যু ব্যবহার করা উত্তম। রাতে ঘুমানোর পূর্বে আপনার মুখে সুট করে এমন কোনো ব্রান্ডের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
৭) মুখের মধ্যে স্পর্শ কম করুন
আমরা প্রতিদিন মুখে হাত দেই। এটা স্বাভাবিক কিন্তু অতিরিক্ত হাত দেওয়া যাবে না৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মুখে হাত দিয়ে কিছু লাগিয়ে নি। কিন্তু অযথা যখন তখন মুখে হাত দিয়ে ডলাডলি করবেন না। মাঝেমধ্যে আয়না দেখুন এবং কোন ময়লা পড়লে টিস্যু দিয়ে পরিস্কার করুন। মুখে চুলকা চুলকি মোটেও করবেন না।
৮) পাকা কলার পেস্ট ব্যবহার
পাকা কলা তকের কোমলভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে মিনিমাম ২/৩ বার পাকা কলা হাত দিয়ে চটকে পেস্ট এর মতো করে মুখে, ঘাড়ে, গলায়, হাতে, পায় লাগান। তারপর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন যেখানে যেখানে কলার পেস্ট লাগিয়েছেন সেখানের ত্বক প্রাণবন্ত দেখাবে আর যদি বয়সের ছাপ বা, বলিরেখা থাকে তাও অনেকটা দুর হয়ে যাবে।
৯) ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার
একটা পাত্রে ডিম ভেঙে কুসুম আলাদা করে সুধু সাদা অংশ মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে নর্মাল জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সুধু জল দিয়ে ধুলে ডিমের গন্ধ নাও যেতে পারে সে ক্ষেত্রে ফেসওয়াস ব্যবহার করুন। ধোয়ার পর দেখবেন মুখের থেকে অনেকটাই বয়সের ছাপ অর্থাৎ বলিরেখা দুর হয়ে গেছে।
১০) ম্যাসেজিং
ঘুমানোর আগে সপ্তাহে মিনিমাম ২/৩ বার Olive Oil তেলের কয়েক ফোঁটা হাতের তালুতে নিয়ে হাতে হাত দিয়ে ঘসে মুখে লাগবেন। তারপর হালকা করে ম্যাসেজ করতে থকবেন। ৪-৫ মিনিট ম্যাসেজ করার পর ভেজা তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে মুখ আলতো করে মুছে নিবেন। দেখবেন কিছুক্ষন সময়ের মধ্যে বয়সের ছাপ অর্থাৎ বলিরেখা অনেকটা দুর হয়ে গেছে।
১১) লেবুর জুস এর ব্যবহার
মুখের বা, শরীরের যে অংশে বয়সের ছাপ অর্থাৎ বলিরেখা পড়েছে সেখানে লেবুর জুস লাগিয়ে ম্যাসেজ করুন দেখবেন বলিরেখা অনেকটা ভ্যানিশ হয়ে গেছে।
উপরের নিয়ম গুলো পালন করার সাথে সাথে প্রতিদিনের অভ্যাস ও খাদ্যাভ্যাস কন্ট্রোল করুন। ভাজাপোড়া খাবার অর্থাৎ ফাস্টফুড ত্যাগ করুন। ফল বেশি করে খান। প্রতিদিন সর্বনিম্ন ৮ গ্লাস জল পান করুন৷ জল কম খেলে শরিরের উপরে যাই করুন না কেনও কাজ হবে না। তাই জল ই লাবন্য ধরে রাখার একমাত্র প্রধান উপাদান। টেনশন মুক্ত হাস্যোজ্জ্বল জীবন কাটান। যদি এই নিয়ম গুলো ফলো করে জীবন অতিবাহিত করতে পারেন তবে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা সহজে শরীরে দেখা দিবে না। এমনকি যদি দেখা দিয়েও থাকে তাও দুর করতে পারবেন।
ধন্যবাদ!!!
Tag: মুখের দাগ দূর করার উপায়, কিভাবে চেহারা টানটান রাখা যায়, ব্রণের দাগ দূর করার উপায়, pigmentation ফল খাওয়ার উপকারিতা, ফলের রস ফল, খেলে কি হয়, ফলের গুনাগুন, কোন ফল খেলে চেহারা সুন্দর হয়, চেহারা উজ্জ্বল করার উপায়, উজ্জ্বল দাগহীন ফর্সা ত্বক, ফেইস প্যাক, Face pack, health tips, how to glowing face, how to whitening face, chehara sundor korar upay, how to remove pimple, how to remove black heads, বয়সের ছাপ দূর করার উপায়, boyoser chap dur korar upay, mukher daag dur korar upa
Post a Comment